গৌরিপুরে নীরবে চলছে মিশনারিদের ভয়ংকর ফাঁদ!
ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর উপজেলা—ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ এক জনপদ। সাহিত্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ধারায় এই এলাকার নাম উচ্চারিত হয়েছে অসংখ্য কবি, সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদের লেখনিতে। এখানকার মানুষের জীবনাচার, সরলতা, পরিশ্রম এবং ঐতিহ্যবাহী সামাজিক বন্ধন সবসময়ই গৌরিপুরকে আলাদা করে রেখেছে।
কিন্তু এই চেনা গৌরিপুরের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক অজানা ও ভয়াবহ বাস্তবতা—এক নীরব অপতৎপরতা, যা ধীরে ধীরে সমাজের ধর্মীয় ভিত্তিকে নড়বড়ে করে দিচ্ছে। এই শান্ত জনপদে বহু বছর ধরে গোপনে সক্রিয় খ্রিস্টান মিশনারিদের একটি সংগঠিত কার্যক্রম চলছে, যা অনেকের অগোচরেই দিন দিন বিস্তার লাভ করছে।
অফিসিয়াল তথ্যের চমকপ্রদ প্রকাশ
২০২২ সালে গৌরিপুর উপজেলা পরিষদের একটি অফিসিয়াল ডকুমেন্ট আমাদের নজরে আসে। সেটি পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখা যায়—বেশ কয়েকজন মুসলমান খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছে। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হলো, এদের অনেকেই এখনো মুসলিম নাম ব্যবহার করছে, অথচ তারা গীর্জার দায়িত্বে থেকে সক্রিয়ভাবে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করছে।
ডকুমেন্ট অনুযায়ী কয়েকজনের নাম নিচে উল্লেখযোগ্য—
১। আবু বকর সিদ্দিক – সভাপতি, এদন ব্যাপ্টিস্ট চার্চ (৩ নং অচিন্তপুর ইউনিয়ন)
২। হাবিবুল্লাহ বাহার – সভাপতি, কুমড়ী ব্যাপ্টিস্ট চার্চ (৪ নং মাওহা ইউনিয়ন)
৩। টিপু সুলতান – সভাপতি, পাঁচকাহনীয়া ঈসায়ী চার্চ (৩ নং অচিন্তপুর ইউনিয়ন)
৪। আব্দুল জলিল – সভাপতি, বালুয়াপাড়া পিসিএস চার্চ (গৌরিপুর পৌরসভা)
৫। দুলাল মিয়া – সভাপতি, ধুরুয়া কড়েহা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ (৪ নং মাওহা ইউনিয়ন)
৬। মাসুদ করিম – সভাপতি, ঝলমলা যিহোবা যিরি ব্যাপ্টিস্ট চার্চ (৪ নং মাওহা ইউনিয়ন)
নামগুলোর দিকে একবার মনোযোগ দিয়ে দেখুন। সবগুলোই মুসলিম নাম,অথচ তারা আপাদমস্তক খ্রিস্টান। তারন সাধারণ খ্রিস্টান নয়,খ্রিস্টধর্মের প্রচারক ও গীর্জার সভাপতি। একবার চিন্তা করে দেখুন তো পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ!
ডকুমেন্টে গৌরিপুর উপজেলার মোট ১৬টি গীর্জার নাম পাওয়া যায়—এর মধ্যে গৌরিপুর পৌরসভায় ৫টি, মাওহা ইউনিয়নে ৪টি, এবং অচিন্তপুর ইউনিয়নে ৩টি গীর্জা রয়েছে। এমনকি খ্রিস্টানদের ধর্মীয় পাঠ্যবই “ইমামদের জন্য কিতাবুল মোকাদ্দস প্রশিক্ষণ" -এর প্রচ্ছদে টিপু সুলতানের ছবিও ছাপা হয়েছে, যা এই কার্যক্রমের গভীরতা ও পরিকল্পনার স্পষ্ট প্রমাণ।
অনেকে মনে করেন খ্রিস্টান মিশনারিরা শুধু পাহাড়ি বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করে। কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন—তারা এখন সর্বত্র মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে, এবং প্রতারণা ও প্রলোভনের মাধ্যমে মানুষকে ঈমানহারা করছে। কি শহর বা কি গ্রাম,সর্বত্রই সমান তালে এদের অপতৎপরতা চলমান।
ব্রিটিশ আমল থেকেই চলমান এক পরিকল্পিত অপতৎপরতা
মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান ও তথ্য সংগ্রহের পর জানা যায়, গৌরিপুরে খ্রিস্টান মিশনারিদের এই কার্যক্রম নতুন নয়—এর ইতিহাস ব্রিটিশ আমল পর্যন্ত বিস্তৃত। নীরবে, পরিকল্পিতভাবে ও বহুমুখী কৌশলে তারা দীর্ঘদিন ধরে ধর্মান্তরকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় আলেম-উলামা ও সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের মতে, প্রকাশ্যে ও গোপনে মিলে হাজারো মুসলমান খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেও ধর্মান্তর ঘটেছে আরও বেশি সংখ্যায়। এসব কার্যক্রমের পেছনে কাজ করছে অর্থনৈতিক প্রলোভন, চিকিৎসা ও শিক্ষাসেবা, বিদেশ ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি, এমনকি ভুয়া “আধ্যাত্মিক সাধক” সেজে প্রতারণা।
“খ্রিস্টান পীর” ও মুরিদ নেটওয়ার্ক
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিকটি হলো—গৌরিপুরে একজন খ্রিস্টান ভন্ড পীরের রয়েছে প্রায় ২০–২৫ জন খলিফা (প্রতিনিধি), এবং প্রত্যেক খলিফার অধীনে আছে এক থেকে দেড় হাজার “মুরিদ” বা অনুসারী। এভাবে তারা বিশাল এক নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যেখানে ধর্মীয় ভণ্ডামির আড়ালে চলছে সক্রিয় ধর্মান্তর কার্যক্রম।
একজন খ্রিস্টান প্রচারক স্বীকার করেছেন—তার মাধ্যমেই প্রায় ১৩ হাজার মুসলমান ও হিন্দু খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা নিয়েছে। এই সংখ্যা যেমন ভয়াবহ, তেমনি তা প্রমাণ করে কতটা পরিকল্পিত ও সংগঠিতভাবে কাজ করছে এই মিশনারি নেটওয়ার্ক।
আমরা কী করতে পারি?
প্রিয় ভাই ও বোন,গৌরিপুরে নজর দিন। এখানে মসজিদ-মাদরাসা, আলেম-উলামা ও দ্বীনদার শ্রেণীর মানুষের অভাব নেই—তবুও গোপনে চলছে ধর্মান্তর ও ঈমান নষ্টের কার্যক্রম।এখন সময় এসেছে সতর্ক হওয়ার, নিজের এলাকাকে নজরে রাখার, এবং সমাজে ঈমানদারদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির।আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের ঈমানকে রক্ষা করেন, দ্বীনের পথে দৃঢ় রাখেন এবং এই ধোঁকাবাজ অপতৎপরতা থেকে মুসলমানদের হেফাজত করেন।আমিন।

إرسال تعليق